লালমনিরহাটের আদিতমারীর নামুড়ি এলাকায় স্বামীকে ফিরে পেতে অনশন শুরু করেছেন রিপা আক্তার নামে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুর থেকে ঐ উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের নামুড়ি মদনপুর এলাকায় স্বামী আশিকুর জামানের বাড়িতে অনশন করছেন তিনি। রিপা আক্তার নামুড়ি মদনপুর এলাকার আবুল কালামের মেয়ে। তার স্বামী আশিকুর জামান একই এলাকার আমির হোসেনের ছেলে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, একই পাড়ার বাসিন্দা হওয়ায় দু’জনের মধ্যে পরিচয় ছিল। পড়াশোনার সুবাধে উভয়ই রংপুরে বসবাস করতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান।
গত বছরের ডিসেম্বরে দু’জনেই নোটারি পাবলিক কার্যালয় লালমনিরহাটে এফিডেভিট করে বিয়ে করেন। পরে রংপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন। আশিকুর রংপুরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে এবং রিপা নার্সিংয়ের ভর্তি কোচিংয়ের কথা বলে পরিবারকে লুকিয়ে একসঙ্গে বসবাস করত। বিষয়টি আশিকুরের পরিবার বুঝতে পেরে কৌশলে তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে রিপার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
এক সপ্তাহ ধরে স্বামীর খোঁজ না পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রিপা। এতে আশিকুরের পরিবার ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। কোনোভাবেই স্বামীর খোঁজ না পেয়ে অবশেষে স্বামীর বাড়িতে ঢুকে অনশন শুরু করেন রিপা আক্তার। ভুক্তভোগী রিপা আক্তার বলেন, আমরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে বিয়ে করে সংসার করছিলাম। শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার স্বামীকে কৌশলে ডেকে এনে লুকিয়ে রেখেছে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। বাড়িতে ঢুকতেও আমাকে বাধা দেওয়া হয়।
আমি জোর করে বাড়িতে ঢুকে স্বামীকে ফিরে পেতে অনশনে বসেছি। রিপার মা রাশেনুর খাতুন বলেন, আমি ও আমার স্বামী ঢাকায় গার্মেন্টস্ এ চাকরি করে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাই। আমার মেয়ে এখানে চাচির কাছে থাকত। মেয়ে গোপনে বিয়ে করেছে শুনে ঢাকা থেকে এসেছি সমাধান করতে। তিনদিন ধরে ছেলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধান করতে ব্যর্থ হওয়ায় মেয়েকেও আটকাতে পারিনি।
সে তার শ্বশুরবাড়ি চলে গেছে। পলাশী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুর রশীদ বলেন, আমি ঘটনা শুনে উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়েকে নিরাপদ স্থানে রেখে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
মেয়েকে তার স্বামীর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আদিতমারী থানার ওসি মোকতারুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সেখানে গিয়েছিল। আমরা বিষয়টি দেখছি।